রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৭ পূর্বাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক : ১৯১ বছর আগে শুরু হয়েছিল ঈদের বড় জামাত। এরও দুশ’ বছর আগে থেকে এখানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর পর নানা প্রতিকূল সময় কেটেছে। কিন্তু ঈদের জামাতে কোনও সমস্যা হয়নি। তবে এবার প্রথম বারের মতো কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান খালি থাকছে ঈদের দিনেও। থাকছে না সেই চিরচেনা কোলাহল। লাখো মানুষের মুখরতা।
চলমান করোনা মহামারিতে এবার হচ্ছে না দেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ ময়দান ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় ঈদুল ফিতরের জামাত। করোনা বিস্তার রোধে খোলা মাঠ ও ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইসলামী ফাউন্ডেশন। এর পরিপ্রেক্ষিতে শোলাকিয়া ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠান না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এবার শোলাকিয়া ঈদগাহে ১৯৩তম ঈদুল ফিতরের বড় জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, করোনা ছড়িয়ে পড়া রোধে সারা দেশে খোলা মাঠ ও ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সেই অনুযায়ী ঐতিহাসিক শোলাকিয়া মাঠে ঈদের জামাত না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে ঈদগাহ কমিটির সভা করাও সম্ভব হচ্ছে না। তবে জাতীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে কমিটির সভাপতি হিসেবে শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে কয়েক দিনের মধ্যে এ নিয়ে স্থানীয় কয়েকজন ইমাম-উলামাদের সঙ্গে মিটিং করা হবে।
জানা গেছে, বারো ভূঁইয়াদের অন্যতম প্রতাপশালী বীর ঈশা খাঁর ১৬তম বংশধর দেওয়ান মান্নান দাঁদ খান ১৯৫০ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহটি ওয়াকফ্ করেন। তারও দুশ’ বছর আগে থেকে শোলাকিয়া মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে বলে উল্লেখ আছে ওই ওয়াকফ দলিলে। ১৮২৮ সালে ঈদুল ফিতরের বড় জামাতে এ মাঠে প্রথম ১ লাখ ২৫ হাজার মুসল্লি এক সাথে ঈদের নামাজ আদায় করেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়ালাখিয়া’। যা এখন শোলাকিয়া নামে পরিচিত।
২০১৬ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহের কাছে পুলিশের একটি নিরাপত্তা চৌকিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা হয়। দুই পুলিশ সদস্যসহ নিহত হন বেশ কয়েকজন। তবু থেমে থাকেনি ঈদের জামাত। তবে এই প্রথম বারের মতো ঈদের দিনেও নীরব থাকছে ঐতিহাসিক শোলাকিয়া।